দক্ষিণ কোরিয়া উন্নত দেশ হওয়ায় অসংখ্য বাংলাদেশি প্রতিনিয়ত চাকরির উদ্দেশ্যে দক্ষিণ কোরিয়া যায়। দক্ষিণ কোরিয়া অসংখ্য কাজের সুযোগ থাকলেও কিছু কাজের চাহিদা বছর জুড়ে থাকে। এ সকল চাহিদা সম্পন্ন কাজের ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া গেলে দীর্ঘদিন কাজ করা যায়। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া কোম্পানি চাকরিগুলোর চাহিদা সব থেকে বেশি। দক্ষিণ কোরিয়া কোম্পানিতে চাকরি করলে অন্যান্য কাজের তুলনায় অধিক টাকা বেতন পাওয়া যায়।
প্রতি বছর সরকারি এবং বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন চাকরির সার্কুলার প্রকাশ করা হয়। সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করে চাকরি পেয়ে গেলে পরবর্তীতে ভিসা তৈরি করে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া যায়। তবে দক্ষিণ কোরিয়া চাকরি পেতে শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং দক্ষতার প্রমাণ দিতে হয়। তবে যোগ্যতা ছাড়াও ক্লিনার, নির্মাণ শ্রমিক ও রেস্টুরেন্টে চাকরির মত চাহিদা সম্পন্ন কাজ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এ সকল কাজের দক্ষতা অর্জন করলে বেতন বৃদ্ধি করা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
চাহিদা সম্পন্ন কাজে দক্ষতা অর্জন করে দক্ষিণ কোরিয়া গেলে অনেক টাকা ইনকাম করা যায়। দক্ষিণ কোরিয়া ভাষা শিখে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় বিভিন্ন ক্যাটাগোরির কাজের সুযোগ রয়েছে।
- সফটওয়্যার ডেভেলপার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।
- শিক্ষক, অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও মার্কেটিং ম্যানেজার।
- গ্রাফিক ডিজাইনার, ব্যাংক টেলার ও ক্লিনার।
- কৃষি কাজ, রেস্টুরেন্ট জব ও হোটেল জব।
- জাহাজ শ্রমিক, ফ্যাক্টরি জব ও নির্মাণ শ্রমিক।
- ড্রাইভিং, ইলেকট্রিশিয়ান ও ওয়েল্ডিং। ইত্যাদি।
দক্ষিণ কোরিয়া চাহিদা সম্পন্ন কাজের বেতন কত
দক্ষতার উপর ভিত্তি করে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের বেতন কম বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন ৫০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে চাহিদা সম্পন্ন কাজের বেতন বেশি হয়ে থাকে। চাহিদা সম্পন্ন কাজের ক্ষেত্রে একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন ৬০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ বেতন ১ লাখ টাকা বা তার অধিক হয়ে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা তৈরি করতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া বিভিন্ন ভিসায় যাওয়া যায়। যেমন কাজের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, পড়াশোনার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা এবং ভ্রমণের জন্য টুরিস্ট ভিসা ইত্যাদি। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা তৈরি করতে সর্বনিম্ন প্রায় ৪ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে
বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার খরচ কম বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে বিমান ভাড়া এবং আনুষঙ্গিক কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ন্যূনতম প্রায় ২ লাখ টাকা থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। ভিসা তৈরি সহ দক্ষিণ কোরিয়া যেতে সর্বনিম্ন প্রায় ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা পাওয়ার উপায়
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা কার্যক্রম চালু রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসা পেতে প্রথমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। অনলাইন এবং অফলাইন দুই ভাবেই দক্ষিণ কোরিয়া ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। অনলাইনে আবেদন করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে এবং অফলাইনে আবেদন করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া সরকার দ্বারা অনুমোদিত এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা তৈরি করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
কয়েকটি ধাপে ভিসা তৈরীর কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এই ধাপ এবং ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী কিছু কাগজ পত্র জমা দিতে হয়। আবেদন ফরম পূরণ এবং যাচাইয়ের সুবিধার্থে এ সকল কাগজপত্র জমা নেওয়া হয়।
- কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদি একটি বৈধ পাসপোর্ট ও ভিসা আবেদন ফরম
- সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি
- পুলিশের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ও মেডিকেল সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটো কপি
- আর্থিক সাপোর্টের প্রমাণপত্র (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
- আপনার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র (সকল ভিসার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় না)
- ড্রাইভিং ভিসার ক্ষেত্রে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। ইত্যাদি।
দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা প্রসেসিং হতে ১২ দিন থেকে ১৮ দিন সময় লাগে। তবে কাগজ পত্রে ভুল থাকলে দক্ষিণ কোরিয়া ভিসা তৈরি করতে অনেক হেনস্থার শিকার হতে হয়। তাই ভিসা তৈরির ক্ষেত্রে অবশ্যই সকল কাগজপত্র সঠিক এবং নির্ভুল ভাবে প্রদান করতে হবে। ধন্যবাদ।